পুকুরে গ্যাস হলে করণীয় কি? পুকুরে বিভিন্ন গ্যাসের ক্ষতিকর প্রভাব ও মুক্তির উপায়
মাছ চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা্। কিন্তু মাঝে মাঝে পুকুরে কিছু ক্ষতিকর গ্যাসের মাত্রা বেরে যাবার কারনে মাছ চাষ তেমন লাভজনক হয়ে উঠে না্। কারন এই সকল গ্যাসের ক্ষতিকর প্রভাবের কারনে বিষক্র্রিয়ায় মাছ মারা যায়। তাই পুকুরে গ্যাসের ক্ষতিকর প্রভাব ও এর থেকে মুক্তির উপায় জেনে নেইঃ
অক্সিজেন গ্যাসের প্রভাবঃ পুকুরের পানিতে অক্সিজেনের পরিমান কমে গেলে মাছ পানির ওপর ভেসে ওঠে এবং পানিতে খাবি খায়। ফুলকা ফেটে যায়, মাছ মুখ খুলে হা করে থাকে।মাছ অনেক ক্লান্ত হয়ে পরে অবশেসষ মারা যায়।
মুক্তির উপায়ঃ হররা টেনে তলের গ্যাস বের করে দিতে হবে, পুকুরের পানিতে সাঁতারকাটা, বাঁশ দিয়ে পানির ওপর পেটানো, পানিতে পাম্প দিয়ে ঢেউয়ের সৃষ্টি সহ নতুন পানি সংযোজন করেও অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ানো যায়। শতাংশ প্রতি ১ কেজি চুন প্রয়োগ করে এবং প্রয়োজনে অক্সিজেন কিনে সমস্যা সামান্যতম হলে এক একরে ৩০০ থেকে ৩৫০ গ্রাম আর যদি সমস্যা মারাত্বক হয় তাহলে ৮০০ থেকে ১ কেজি পরিমানে প্রয়োগ করে পানির অক্সিজেনের মাত্রা বাড়াতে হবে।
কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসের প্রভাবঃ পুকুরের পানিতে কার্বন ডাই অক্সাইড এর মাত্রা বেড়ে গেলে মাছের দেহে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। মাছের শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
মুক্তির উপায়ঃ পুকুরে মাছের ঘনত্ব কমাতে হবে। পুকুরে উদ্ভিদ কণা বাড়াতে হবে। পুকুর তৈরির সময় অতিরিক্ত কাদা সরিয়ে ফেলতে হবে। উপরে বর্ণিত করণীয়গুলো করা যেতে পারে। এছাড়াও প্রয়োজনে পুকুরে ২৫০ মিলিগ্রাম/লিটার হারে লবণ প্রয়োগ করা যেতে পারে।
অ্যামোনিয়া গ্যাসের প্রভাবঃ অ্যামোনিয়ার পরিমাণ বেড়ে গেলে পুকুরের পানির রঙ তামাটে অথবা কালচে রঙের হয়ে যায়। পুকুরে মাছের ছোটাছুটির মাত্রা বেড়ে যায়। মাছ মারা যায়।
মুক্তির উপায়ঃ পুকুর সাময়িকভাবে সার ও খাদ্য প্রয়োগ না করে পুকুরে নতুন করে প্রয়জন মত পানি সংযোজন করতে হবে।পুকুরে মাছের ঘনত্ব কমিয়ে ফেলতে হবে।শতাংশে প্রতি ১-২ কেজি হারে লবণ প্রয়োগ করতে হবে।
নাইট্রোজেন গ্যাসের প্রভাবঃ পুকুরে নাইট্রাইটের মাত্রা বেড়ে গেলে মাছের দেহে অক্সিজেন সঞ্চালন বাধা প্রাপ্ত হয় ফলে মাছের দেহ বাদামি বর্ণ ধারণ করে। পুকুরে বিষাক্ততার সৃষ্টি হয় যার ফলে মাছ খাদ্য গ্রহণ বন্ধ করে দেয়।
মুক্তির উপায়ঃ পুকুরে মাছের ঘনত্ব কমিয়ে ফেলতে হবে।পুকুরে প্রতি লিটার ২৫০ মিলিগ্রাম হারে লবন প্রয়োগ করতে হবে।
এছাড়াও পানিতে পিএইচ কমে গেলে মাছের দেহ হতে পিচ্ছিল পদার্থ বের হয়। এ অবস্থায় মাছ খাদ্য খাওয়া কমিয়ে দেয়।আবার পিএইচ বেশি হলে প্রাকৃতিক ভাবে খাদ্য উৎপাদন কম হয়। পুকুরে মাছের খাদ্য চাহিদাও কমে যায়। মাছের দেহ খসখসে হয় যায় এবং মাছ রোগাক্রান্ত হয় পড়ে।
পিএইচ কম হলে চুন বা জিপসাম ১ থেকে ২ কেজি/শতাংশ প্রতি প্রয়োগ করতে হবে এবং পিএইচ বেশি হলে পুকুরে তেঁতুল বা সজনে গাছের ডাল ৪-৫ দিন ভিজিয়ে রেখে পরে তুলে ফেলে দিতে হবে। তাছাড়াও তেঁতুল পানির সাথে গুলিয়ে প্রয়োগ করা যেতে পারে।
আরো যা যা পড়তে পাড়েনঃ