হাঁসের বাচ্চা পালন পদ্ধতি ও ব্রুডিং ব্যাবস্থাপনা
হাঁসের বাচ্চা পালন পদ্ধতি ও ব্রুডিং ব্যাবস্থাপনা
হাঁস পালন লাভজনক। খামরিরা ডিমের জন্য এবং মাংস উৎপাদনের জন্য হাঁস পালন করে থাকে।কিন্তু অনেক খামারিরাই সঠিকভাবে হাঁস পালন বিশেষ করে হাঁসের বাচ্চার সঠিক পরিচর্যা করতে পারে না বিধায় তেমন আশানুরুপ ভাবে লাভবান হতে পারে না। তাই আজকে হাঁসের বাচ্চার সঠিক পরিচর্যা ও ব্রুডিং ব্যাবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করব।
বাচ্চা সংগ্রহঃ স্বিকৃত কোন ভালো হ্যারি থেকে সুস্থ্য সবল রোগমুক্ত ও চন্চল প্রকৃতির বাচ্চা সংগ্রহ করতে হবে।কোন ভাবেই নাভি উন্মুক্ত ও দূর্বল বাচ্চা সংগ্রহ করা যাবে না।
লিটার প্রস্তুতকরণঃ
হাসের বাচ্চা রাখার জন্য মেঝেতে ২-২.৫ ইঞ্চি পুরু করে ধানের তুষ বা কাঠের গুড়া বিছিয়ে দিতে হবে যেনো বাচ্চার মল-মূত্র সহজেই চুষে নেয়।লিটারের উপর চটের বস্থা দিয়ে দিতে হবে।চটের বস্থা নোংরা হয়ে গেলে পালটিয়ে পুনরায় ভালো বস্থা পেড়ে দিতে হবে।
ব্রুডিং ঘরঃ
ব্রুডিং ঘর হতে হাঁসের বাচ্চা যেনো বের হয়ে না যেতে পারে তার জন্য ২-৩ ফুট উচু করে বেড়া বা চিকগার্ড দিতে হবে। ব্রুডিং ঘরে প্রযোজণীয় তাপ প্রদান করার জন্য হোপারের ব্যবস্থা করতে হবে।
হাঁসের বাচ্চার জন্য তাপমাত্রাঃ
বাচ্চার বয়স তাপমাত্রা সেলসিয়াস
১-৭ দিন ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস
৮-১৪ দিন ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস
১৫-২১ দিন ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস
২২-২৮ দিন ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস
প্রথম দিন হতেই তাপমাত্রা ক্রমান্নয়ে কমিয়ে এনে পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানো পযন্ত তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে হবে।
আলোর ব্যবস্থাপনাঃ
বাচ্চার ব্রুডিং এ প্রথম দিন থেকেই দিনে ২৪ ঘন্টা আলোর ব্যাবস্থা করতে হবে। যেনো বাচ্চা সহজেই খাদ্য ও পানির পাত্র চিনতে পারে। প্রয়োজন মত খাবার ও পানি পান করতে পারে।পরবর্তিতে দিনে দিনে আলো কমিয়ে এনে পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।
বাচ্চার খাবার ও পানির পাত্রঃ
২০-২৫ টি বাচ্চার জন্য একটি খাবার পাত্র ও ৪০-৫০ টি বাচ্চার জন্য একটি করে পানির পাত্ত্রের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে লক্ষ রাখতে হবে যে, পানির পাত্রে পরে বাচ্চা যেনো ভিজে না যায়।
বাচ্চার খাদ্যঃ
হাঁসের বাচ্চা খামারে আনার পর, প্রথমেই বাচ্চাকে স্যালাইন বা গ্লুকোজের পানি পান করাতে হবে। প্রায় ১ ঘন্টা পর বাচ্চাকে খাদ্য প্রদান করতে হবে। মুড়ি অথবা চিড়া ভিজিয়ে নরম করে মেঝেতে ছিটিয়ে দিতে হবে। এভাবে প্রথম ২ দিন খাওয়াতে হবে। ২দিন পর থেকে এক মাস বয়স পর্যন্ত বাচ্চাকে শুধু মাত্র স্টাটার ফিড পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিয়ে খাওয়াতে হবে, তবে খেয়াল রাখতে হবে খাবার যেন বেশি ভিজে না যায়। কারন শুকনা খাবার হাঁসের বাচ্চা খেতে পারে না।
বাচ্চাকে পানিতে ছাড়াঃ বাচ্চার বয়স ১৫-১৬ দিন হলে বাচ্চাকে পানিতে দিতে হবে। এর আগে বাচ্চাকে পানিতে ছাড়া যাবে না, তাহলে বাচ্চার ঠান্ডা লেগে যেতে পারেে এবং বাচ্চাকে বেশি সময় ধরে পানিতে রখা যাবে না। প্রথম দিন বাচ্চাকে আধা ঘন্টা পানিতে গোসল করাতে হবে এবং প্রতি দিন অল্প অল্প করে সময় বাড়াতে হবে।
একজন অভিঙ্গ ডাঃ এর পরামশ অনুযায়ি বাচ্চাকে ঔষধ খাওয়াতে হবে এতে করে বাচ্চার মৃত্যু হার রোধ সহ বাচ্চা দ্রুত বেড়ে উঠবে।
টিকা প্রদানঃ
বয়স টিকার নাম প্রয়োগ বিধি
২৫ দিন ডাক প্লেগ ১ মিলি করে বাচ্চার রানের মাংসে।
৪২ দিন ডাক প্লেগ ১ মিলি করে বাচ্চার রানের মাংসে।
৬০ দিন ডাক কলেরা ১ মিলি করে বুকের চামরার নিচে।
৭৫ দিন ডাক কলেরা ১ মিলি করে বুকের চামরার নিচে।
লক্ষণীয় বিষয়ঃ
- হাঁসের বাচ্চার ঘর সবসময় পরিস্কার পরিচ্ছন্য রাখতে হবে।
- লিটারে যেন অ্যমোনিয়া গ্যাস না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
- বাচ্চার ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
- কোন বাচ্চার মাঝে অস্বাভাবিকতা দেখা দিলেই একজন অভিঙ্গ ডাঃ এর পরামর্শ অনুযায়ি ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।