বাজরিগার পাখি পালন পদ্ধতি। স্ত্রী ও পুরুষ বাজরিগার পাখি চেনার উপায়।

bedgerigar pakhi palon-simply bangla

 বাজরিগার পাখি পালন পদ্ধতি। 

বাজরিগার পাখি প্যারাকিট গোত্রের পাখি।বাজরিগার পাখি আকৃতিতে ছোট হয় (প্রায ৭-৮ ইঞ্চি) , লম্বা লেজ বিশিষ্ট, নীল, হলুদ, সাদা ও ধুসর রংয়ের হয়ে থাকে।বাজরিগার পাখি  অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের বনাঞ্চলের পাখি।তাস্মেনিয়া ছাড়াও আশপাশের কয়েকটি দেশেও এই পাখির বসবাস।বর্তমানে বিশ্বের প্রায সব দেশেই এই পাখি খাঁচায় পালিত হচ্ছে। শখের বসে বাজরিগার পাখি পালন করা হলেও বর্তমানে এটি বানিজ্যিকভাবেও পালন করে অনেকেই স্বাবলম্বি হচ্ছেন।

পুরুষ বাজরিগার পাখি চেনার উপায়ঃ

পূর্ণবয়স্ক পুরুষ বাজরিগার পাখির কপাল ও ঠোঁটের মাঝ হতে নাকের ছিদ্রের চারপাশে নীল রংয়ের ঝিল্লি দেখা যায়। তবে অল্পবয়স্ক পুরুষ বাজরিগারের ঝিল্লির রং গোলাপি বা বেগুনি হয়ে থাকে। বাজরিগার পাখি যখন ধিরে ধিরে পূর্ণবয়স্ক পুরুষে পরিনত হয় তখন এই ঝিল্লির রং নীল হয়ে যায়।

স্ত্রী বাজরিগার পাখি চেনার উপায়ঃ

পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী বাজরিগার পাখির কপাল ও ঠোঁটের মাঝ হতে নাকের ছিদ্রের চারপাশে বাদামি রংয়ের ঝিল্লি দেখা যায়। তবে অল্পবয়স্ক স্ত্রী বাজরিগারের ঝিল্লির রং  হালকা সাদা, গোলাপি এবং নীল-সাদার সংমিশ্রণের হতে পারে। বাজরিগার পাখি যখন ধিরে ধিরে পূর্ণবয়স্ক স্ত্রীতে পরিনত হয় তখন এই ঝিল্লির রং বাদামি হয়ে যায়।

বাজরিগার পাখি পালন পদ্ধতি

বাজরিগার পাখি বনে জঙ্গলে ৪-৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে পারে কিন্তু খাঁচাতে প্রায় ১০-১২ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।৪-৫ মাস বয়সেই এরা প্রজনন উপযোগী হয়ে পরে। এরা প্রথমদিকে  ৪-৫টি ডিম দিলেও পরবর্তিতে ৮-১০ টি পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে।বাজরিগার পাখির ডিম থেকে বাচ্চা ফুটতে ১৭-১৮ দিন সময় লাগে। বাচ্চাগুলো ১ মাসের মধ্যেই উড়তে পারে।

বাজরিগার পাখির খাদ্য

বাজরিগার পাখিকে সাধারনত কাউন, চিনা,তিসি, গুজিতিল, পোলাও চালের ধান, দূর্বা ঘাস, সিদ্ধ ডিম, পালং,কলমি শাক,মটরশুটি, খাওয়ানো যায়।আপেলও মাঝে মাঝে কাচা দেয়া যায়। 

বাজরিগার পাখি পালনের জন্য আপনার বাজার থেকেই ২৫০-৩০০ টাকার মধ্যেই ব্রিডিং উপযোগি খাচা পেয়ে যাবেন। কমপক্ষে দুই জোড়া বয়স্ক পাখি কিনে পালন  শুরু করতে হবে।  তিন বা চার মাস বয়সের দুইজোড়া পাখির দাম ১ হাজর থেকে ১ হাজার ২শ’ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন।

পাখি কেনা হয়ে গেলে একটি খাচায় পুরুষ পাখি ্ওবং আরেকটি খাচায় মেয়ে পাখি কিছু দিনের জন্য রাখুন দিন। খাচা দুটোকে পাশাপাশি রাখবনে যেন পুরষ পাখি মেয়ে পাখিকে দেখতে পায়। এভাবে কিছুদিন রাখার পর জোড়া মিলিয়ে (১টি পুরুষ ১টি মেয়ে) রাখুন।পুরুষ পাখিটি লাফিয়ে মেয়ে পাখিটির পাসে বসে ঠোঠে ঠোট মিলানো ছাড়াও পুরুষ পাখিটি মেয়ে পাখিটিকে খাবার খাইয়ে দেওয়া মাথানেরে নেরে একে ওপরে সম্মতি জানানো

এইসব লক্ষণ দেখালে পাখির খাঁচার ভিতর হাঁড়ি দিয়ে হাঁড়ির ভিতর কিছু খড়কুটো দিয়ে দিন।যদি মেয়ে পাখি এই খড়কুটো ফেলে দেওয়া শুরু করে তবে বুঝবেন পাখির ডিম পাড়ার সময় এসেছে।।

ব্রিডিং সময়ে পাখির প্রচুর শক্তি প্রয়োজন হয় বলে পাখিদের অতিরিক্ত খাবার, মিনারেল ব্লক, সমুদ্রের ফেনা এবং ক্যালসিয়াম ব্লক খেতে দিন।পাখি বসার জন্য প্লাস্টিক ও লোহার পাইপের পরিবর্তে গাছের ডাল বা কাঠ ও বাশ ব্যবহার করতে হবে।

বাজরিগার পাখি মেটিং করা শুরু করলে প্রথম ডিম পারতে ৮-১০ দিন সময় লাগে এবং পরের ডিমগুলো ২-৩ দিন পর পর করে পাড়ে।বেশিরভাগ ক্ষেত্র বাজরিগার পাখি ২-৩ টি ডিম পাড়ার আগে ডিমে তা দেয় না।

ডিমে তা দেয়া অবস্থায় মেয়ে পাখিটির যত্ন নিতে হবে। যদি মেয়ে পাখিটি কোন কারন ছাড়া বাচ্চা ফুটার আগেই ডিম এ তাপ দেয়া বন্ধ করে দেয় তবে বুঝবেন মেয়ে পাখিটি ভাল মা নয়। তথাপি ডিমে তা দেয়ার সময় খাচার সামনে দিয়ে বেশি যাতায়াত করা যাবে না, উচ্চ শব্দ, চেচামেচি ও ঘন ঘন ডিম দেখা যাবে না এতে পাখি ডিমে তা দেয়া বন্ধ করে দিতে পারে।

ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা বের হয়ে বাবা-মায়ের মুখ থেকে খাবার খাওয়া ছেড়ে দিলে বাচ্চাগুলোকে আলাদা করে দিবেন। কিছু কথা, সপ্তাহে  কমপক্ষে ২ দিন কলমি শাক, পালন শাক বা দূর্বা ঘাস খেতে দিন। নিয়মিত প্রতিদিন সকালে পানি বদলিয়ে ভালো পানি দিন। পাখিকে বিরক্ত কর থেকে বিরত থাকুন। নিয়মিত পাখির খাচা পরিস্কার করতে হবে।

আরো যা যা পড়তে পারেনঃ



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url